বর্তমান বিশ্ববাসীর কাছে এক বিতর্কের নাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য প্রায়ই আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হন তিনি।
সাবেক মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন আমেরিকার ম্যাগাজিন লেখিকা ই জিন ক্যারল, সেই মামলায় এবার বিপুল অঙ্কের অর্থ জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন আদালত।
যৌন নিপীড়নের দায়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ মিলিয়ন ডলার বা ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের জরিমানা করা হয়েছে। এই সম্পূর্ণ অর্থ লেখিকা ই জিন ক্যারলের হাতেই দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মার্কিন ম্যাগাজিন লেখিকা ক্যারল সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বহু বছর আগে মামলা দায়ের করেছিলেন।
৯ মে ২০২৩ বুধবার তিন ঘণ্টার শুনানির পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে দেন আদালতের ৯ জন জুরি সদস্য।
ধর্ষণের বদলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ বহাল থাকে। মামলা চলাকালে শুনানিতে একবারের জন্যেও হাজিরা দেননি রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তাঁর পক্ষের আইনজীবীরাও বক্তব্য দেওয়ার জন্য কোনও সাক্ষীকে আদালতে পেশ করতে পারেননি। ট্রাম্পের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিও রেকর্ডিং উপস্থাপন করেছেন তারা।
যেখানে ট্রাম্প ই জিন ক্যারল একজন মিথ্যেবাদী ও অসুস্থ মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি বলে শুনতে পাওয়া যায়। সেই ভিডিওটির ওপর ভিত্তি করেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বপক্ষের বক্তব্য নথিভুক্ত করা হয়।
উভয় পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আদালত এই সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছায় যে, ধর্ষণ নয়, ট্রাম্পের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন ক্যারল।
এই অভিযোগের দায়ে সাবেক প্রেসিডেন্টকে ৫০ লাখ ডলার জরিমানার শাস্তি দেওয়া হয়। এই সম্পূর্ণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে লেখিকার কাছেই দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় ম্যানহাটন ফেডারেল আদালত।
শুনানিতে অংশ নেন ৯ সদস্যের বিচারক বোর্ড। বিচারকদের দলে ছিলেন ছয়জন পুরুষ ও তিনজন নারী। তারা সবাই একমত হয়েই এই রায় দিয়েছেন।
এই রায়ের ফলে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো যৌন নিপীড়নের জন্য আইনগতভাবে দায়ী হলেন। যদিও এতোদিন এই ঘটনা অস্বীকার করে আসছিলেন ট্রাম্প।
সিভিল ট্রায়ালের সময় ৭৯ বছর বয়সী জিন ক্যারল সাক্ষী দিয়ে বলেন, ৭৬ বছর বয়সী ট্রাম্প ১৯৯৬ সালে ম্যানহাটনের বার্গডর্ফ গুডম্যান ডিপার্টমেন্ট স্টোরের ড্রেসিং রুমে তাকে ধর্ষণ করেছিলেন।
তারপর ২০২২ সালের অক্টোবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনাটিকে ‘প্রতারণা’ ও ‘মিথ্যা’ আখ্যা দেন।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে ‘সম্পূর্ণ অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছেন। রায়ের পর ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, ‘সত্যিই আমার কোনো ধারণা নেই, এই নারী কে। এই রায় অপমানজনক।’
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২১তম প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট পদে ২০১৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির হিলারি ক্লিংটনকে পরাজিত করেন।
নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য দ্বিতীয় মেয়াদে আর প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এর কাছে ২০২০ সালে ধরাশায়ী হন তিনি।