চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসেই জাপানকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গাড়ি রপ্তানিকারক দেশ এখন এশিয়ার আরেক দেশ চীন। এমন দাবি করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন।
সম্প্রতি প্রকাশিত দেশটির আনুষ্ঠানিক হিসাব মতে, প্রথম তিন মাসে ১০ লাখ ৭ হাজার গাড়ি রপ্তানি করেছে চীন, যা ২০২২ সালের প্রথম তিন মাসের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি।
এই একই সময়ে জাপান রপ্তানি করেছে ৯ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৫টি গাড়ি, যা গত বছরের চেয়ে ৬ শতাংশ বেড়েছে।
বিশ্বব্যাপি ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা ও রাশিয়ায় চীনের একচেটিয়া ব্যবসার কারণে রপ্তানিতে এতো ব্যাপক প্রবৃদ্ধ ঘটেছে চীনের।
গত বছর জার্মানিকে পেছনে ফেলে বিশ্বে গাড়ি রপ্তানিকারকের তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে চীন। বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার বিষয়টি চীনের গাড়ি শিল্পে এতো গতি এনেছে।
চীনের কাস্টমস বিভাগের হিসেব বলছে, ২০২২ সালে দেশটি রপ্তানি করেছে ৩২ লাখ গাড়ি, আর জার্মানির রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬ লাখ।
গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম তিন মাসে নিউ এনার্জি ভেহিকেলস (এনইভিস) রপ্তানি বেড়েছে ৯০ শতাংশের বেশি, যার মধ্যে ইলেকট্রিক কারও আছে।
চীনে টেসলার সহযোগী সাইক-যারা একইসঙ্গে এমজে ও বিওয়াইডি ব্র্যান্ডের মালিক, চীনে তারাই এনইভিস রপ্তানির শীর্ষে। তাদের সঙ্গে বিনিয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ওয়ারেন বাফেটও।
ইলন মাস্কের ইলেকট্রিক গাড়ি টেসলান তৈরির একটা বিশাল কারখানা আছে চীনের বাণিজ্যিক নগরী সাংহাইয়ে। যেখান থেকে জাপান ও ইউরোপ অঞ্চলে গাড়ি রপ্তানি হয়ে থাকে।
টেসলার ‘গিগাফ্যাক্টরি’ এই মূহুর্তে বছরে ১.২৫ মিলিয়ন গাড়ির উৎপাদনে সক্ষম। কোম্পানিটি এর ধারণক্ষমতা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। গত মাসেই কানাডায় রপ্তানির জন্য মডেল ওয়াই স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল তৈরি শুরু করেছে তারা।
এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যখন পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর নানা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন রাশিয়ায় চীনের রপ্তানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর টয়োটা ও ভক্সওয়াগনের মতো কোম্পানি রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। সে সময় রাশিয়ায় মার্কেট শেয়ার বেড়ে যায় চীনা গাড়ি নির্মাতা গিলি, শেরি ও গ্রেট ওয়ালের মতো কোম্পানিগুলোর।
গাড়ি রপ্তানিতে গত বছরই জার্মানিকে ছাড়িয়ে গিয়ে গাড়ি ইন্ড্রাস্ট্রিতে আলোচনার ঝড় তুলেছিল চীন। এবার চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেই জাপানকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠায় আবারও নতুন করে আলোচনায় আসলো এশিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন।