করোনার চেয়ে বড় ঢেউ আসছে, দাপিয়ে বেরাচ্ছে ২৭ দেশে। করোনা মহামারীর স্মৃতি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে সমগ্র বিশ্ববাসী। করোনার সেই ক্ষত ভুলতে না ভুলতেই চোখ রাঙাচ্ছে মাঙ্কিপক্স নামের আরেক ভাইরাস।
কিন্তু এবার সবার ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্সইসি (XEC) ভেরিয়েন্ট। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রায় ২৭টি দেশে এই ভাইরাস দাপিয়ে বেরাচ্ছে। এই ভিডিওতে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
২০২০ সালের পর থেকে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল করোনা ভাইরাস। তবে এবার এই করোনা ভাইরাস আবারও ছড়িয়ে পড়ছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। চলতি বছরের জুনে জার্মানির বার্লিনে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট এক্সইসি শনাক্ত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের মতোই বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভ্যারিয়েন্ট। ৫ সেপ্টেম্বর স্ক্রিপস রিসার্চের আউটব্রেক ডট ইনফো (Outbreak.info) পেজে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য ও ১৫টি দেশে ৯৫ জনের দেহে এই ভ্যারিয়েন্টের ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে।
একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ডেটা ইন্টিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ জানিয়েছেন, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার প্রায় ২৭টি দেশে নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে।
আগামী দিনে এই ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ডিফ্লুকির মতো চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যা ডিফ্লুকিউই নামে পরিচিত তার কেপি ৩.১ ভেরিয়েন্ট আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে।
১ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভ্যারিয়েন্টের প্রায় ৫২.৭ শতাংশ রোগী পাওয়া গেছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক্সইসি ভ্যারিয়েন্ট যত দ্রুত ছড়াচ্ছে, কেপি ৩.১ ভ্যারিয়েন্টের পর এটি দ্বিতীয় বড় হুমকি হতে পারে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, জার্মানি, ডেনমার্ক, ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসে এক্সইসি ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত বাড়ছে। এই ভ্যারিয়েন্টে কিছু নতুন মিউটেশনও রয়েছে। এটি শীতের মৌসুমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভাইরাসটিকে রুখতে ভ্যাকসিনও রয়েছে।
এক্সইসি ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে গবেষকরা বলছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসের মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্ট আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, এর ফলে করোনাভাইরাসের আরেকটি ঢেউ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে,
আগের তুলনায় এখন পরীক্ষা কমে যাচ্ছে, তাই ভাইরাসটি কতটা ছড়িয়েছে তা বের করা বর্তমানে কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য বলছে, এই ভ্যারিয়েন্টটি প্রথমে ভারতের মহারাষ্ট্রে নিশ্চিত হয়েছিল, তারপরে আমেরিকাসহ আরও ৯টি দেশে এক্সইসি ভ্যারিয়েন্টের রোগীরা এসেছিলেন। একই সঙ্গে চীন, ইউক্রেন, পোল্যান্ড ও নরওয়ের রোগীদের মধ্যেও এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
বলে রাখা ভালো, মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। জ্বর কমলে শরীরে দেখা দেয় ফুসকুড়ি। অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। পরে হাতের তালু ও পায়ের তলাসহ অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে।