এক সময় সবুজ ছিল সাগরের পানির রং

সমুদ্রের পানির রং নিয়ে অবাক করা তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। মহাকাশ থেকে যদি পৃথিবীকে দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে সব পানির রং একেবারে নীল। তবে এবার জাপানি গবেষকরা নতুন তথ্য সামনে তুলে ধরলেন। তারা জানিয়ে দিলেন পৃথিবীর পানির রং কোনও এক সময় ছিল সবুজ।

এর কারণ হিসেবে জাপানের গবেষকরা জানান, পৃথিবীর পানির সঙ্গে ফটোসিন্থেসিসের একটি বিরাট সম্পর্ক রয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে কোটি কোটি বছর আগে। পৃথিবীতে পানির প্রথম স্পর্শ পাওয়ার পর থেকেই এখানে পানির নিচে গাছের জন্ম হতে শুরু হয়। সেই সময় সেই গাছ পানি থেকেই নিজেদের কাজ চালিয়ে নিত। ফলে পৃথিবীতে থাকা সব পানির রং সেই সময় ছিল একেবারে সবুজ।

পৃথিবীর সমুদ্রের রং আগে সবুজই ছিল, ছবি: সায়েন্স এলার্ট

এই ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে শুরু করে আরও ৩.৮ থেকে শুরু করে ১.৮ বিলিয়ন বছর আগে। যেসব প্রাণির পৃথিবীতে পানির স্পর্শ পেয়ে প্রাণের সঞ্চার শুরু হচ্ছে। তখন পৃথিবীর বেশিরভাগ প্রাণি নিজের জীবনকে খুঁজতে ব্যস্ত। তাহলে এখান থেকে প্রশ্ন আসতে পারে কীভাবে পৃথিবীর এই পানির রং পরিবর্তন হল।

গবেষকদের দাবি, পৃথিবীতে পরবর্তীকালে প্রচুর আগ্নেয়গিরি তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে ঘন ঘন আগুনের বৃষ্টি হত। সেই লাভা ধীরে ধীরে পানির সঙ্গে মিশে সেখান থেকে পানির রঙের পরিবর্তন করেছে। তাই বর্তমানে পৃথিবীর পানির রং নীল হয়েছে।

জাপানের ইও জিমার চারপাশের সমুদ্রের সবুজাভ রং, ছবি: দ্য কনভার্সেশন

সমুদ্রের পানির নিচ থেকে প্রথম অক্সিজেন তৈরি হতে শুরু করেছিল। এটাও পৃথিবীর পানির রং পরিবর্তনের একটি বিরাট কারণ ছিল। সাগরের পানিতে যত পরিমানে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে দিল ততই পানির রং পরিবর্তন হতে শুরু করে দিল। তবে পৃথিবীর সমুদ্রের রং আগে সবুজই ছিল।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগ, সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট স্কুলের তারো মাতসুও, কুমিকো ইতো-মিওয়া, ইউরি আই ফুজি, চিহিরো আরাই ও ইউকি কাতো। এ ছাড়া নাগোয়া ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চের সাতোমি কান্নো

জাপানের একদল গবেষক রং নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করেন, ছবি: গ্যাজেট ৩৬০

জিএফজেড জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স এর ইয়োসুকে হোশিনো, জাপানের সিনক্রোট্রন রেডিয়েশন রিসার্চ সেন্টারের ইয়োসুকে হোশিনো, জাপানের কিয়োটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের ইউরি আই. ফুজি, শিনোসুকে তাকেদা, চিকো ওনামি ও হিদেকি মিয়াশিতা।

সূত্র: ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং, ইউনিভার্স ম্যাগাজিন, লাইভ সায়েন্স ও নেচার জার্নাল