যেই বয়সে বন বাদরে দূরন্ত কিশোরী আলতা রাঙা নুপুর পায়ে চঞ্চল শব্দে হাটে
সাত পাতা লুকোচুরি বৌছি খেলায় মাতিয়ে এপাড়া ওপাড়া ছোটে।
সেই বয়সে বৌ হয়েছি নোলক নাকে কলসি কাখে
ঘোমটা টানা গায়ের বধূ বলবো দুঃখ কাকে।
যেই বয়সে আহ্লাদী সুর বাবার কাছে শত বায়না
মিষ্টি মুখের বচন শুনে ভাই বোন বলে আদরের ময়না।
সেই বয়সে রাধি বারি মোটা পাড়ের শাড়ি পরি মুখের দিকে কেউ চায় না।
চোখ রাঙিয়ে বলে মেয়ে তুমি তো ছোট না?
মা তোমায় কি শিখিয়েছে কিছুইতো পারো না।
যেই বয়সে রাশি রাশি স্বপ্ন জমা মনের কোণে
পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চরে রাজকুমার আসবে কোনক্ষণে।
সেই বয়সে আইবুড়ো এক গোঁফ ওয়ালা লোকের সেবাদাসী
কাজের জন্য বৌ এনেছি নয়তো হতাম পরবাসী।
যেই বয়সে চপল হাসির খিলখিলেই প্রতিধ্বনী তোলে
সেই বয়সে চোখের কাজল মুছে অশ্রু নোনা জলে।
যেই বয়সে হতাম রাতজাগা এক পাখি
সেই বয়সে সকাল সন্ধ্যা খাবার বেড়ে খেতে ডাকাডাকি।
যেই বয়সে ভার্সিটি যায় সহপাঠীরা
দেশ জয়ের গল্প করে নিজে দেশ গড়বে বলে।
সেই বয়সে উনুন জ্বালি পাঠকাঠিতে
ভাবতে হয় দশজনের রান্না হবে কোন পাতিলে।
যেই বয়সে অন্যেরা অপয়েন্টমেন্ট লেটার খোলে
সেই বয়সে মা হয়েছি সন্তান আমার কোলে।
বাংলার শত নারীর প্রতিচ্ছবি এমন
মানিয়ে নেওয়ার মাঝেই যেন সুখের আলাপন।
কলমে: রেবেকা ইয়াসমিন, সাহিত্যিক ও ছড়াকার