বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ও বড় দেশ কোনটি

পৃথিবীতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৯৫ টি দেশ রয়েছে। ভৌগলিক অবস্থানসহ বিভিন্ন কারণে দেশগুলো তৈরি হয়। অনেক বড় বড় দেশ ভেঙ্গে নতুন একটি দেশের আবির্ভাব ঘটে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে ১৫টি স্বাধীন দেশের জন্ম হয়। আবার বিভিন্ন দেশের অনেক প্রদেশ, দ্বীপ ইত্যাদি নিজেদের স্বাধীন দেশ হিসেবে দাবি করলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটি আর বড় দেশ হচ্ছে রাশিয়া। এই নিবন্ধে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ও বড় দেশ সম্পর্কে জানবো

ভ্যাটিকান সিটি:

ছোটবেলা থেকে সাধারণ জ্ঞানের বই কিংবা পাঠ্য বইয়ে হয়তো অনেকবার আমরা পড়েছি যে ভ্যাটিক্যান সিটিই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ।

তাই বলাই বাহুল্য, তালিকার একেবারে শীর্ষেই থাকবে ভ্যাটিকান সিটি। ১১০ একর বা ০.৪৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ১০০০।

তবে ভ্যাটিকান সিটির গুরুত্ব ও আবেদন কিন্তু কম নয়। সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচিত এই ভ্যাটিকান সিটি।

শুধু তাই নয়, জগদ্বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল এঞ্জেলো ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সঙ্গেও ঐতিহাসিকভাবে জড়িয়ে আছে এই শহর। আর ভ্যাটিকান সিটিতেই যে পোপের অবস্থান, তা তো সকলেরই জানা।

ভ্যাটিকান সিটি ছোট্ট হলেও, এখানে আছে দর্শনীয় স্থান। চাইলেই ঘুরে দেখা যাবে সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা, সেন্ট পিটারস স্কয়ার, ভ্যাটিকান জাদুঘরের মতো বিখ্যাত জায়গাগুলো।

১৯২৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ল্যাটারান চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইতালি থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভ্যাটিকান সিটি। দেশটির অবস্থান ইতালির রাজধানী রোমের অভ্যন্তরে ও টাইবার নদীর পূর্বে।

আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বের ক্ষুদ্রতম সার্বভৌম রাষ্ট্র। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ৮২৫ জন থেকে বেড়ে ১০০০ জন হয়েছে। এখানকার রাষ্ট্রনেতা পোপ ফ্রান্সিস।

দেশটিতে নদী বা সমুদ্রও নেই। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জাদুঘরগুলোর মধ্যে অন্যতম ভ্যাটিকান জাদুঘর। দেশটির আয়তনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকাজুড়ে রয়েছে বাগান।

পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় উন্মুক্ত এলাকা হলো সেন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা এবং ভ্যাটিকান মিউজিয়াম।

অবকা হওয়ার বিষয় হলো, ভ্যাটিকানে কোনো বিমানবন্দরও নেই। কারণ বিমান অবতরণ করার মতো জায়গা নেই দেশটিতে।

তবে এটির কাছাকাছি ইতালির সিয়াম্পিনো ও ফিউমিসিনো বিমানবন্দর রয়েছে। সেখানকার নাগরিক বা পর্যটকরা এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে থাকে।

ছোট দেশ হলেও বিশ্ববাসীর আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে ভ্যাটিকান। প্রতি বছর বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক এখানে ঘুরতে আসে।

রাশিয়া:

রাশিয়া আয়তনে বিশ্বের সর্ব বৃহৎ দেশ যার পূর্ব নাম ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই দেশের রাজধানীর নাম মস্কো। উত্তর এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের বিশাল অংশজুড়ে রাশিয়ার অবস্থান।

আয়তনে ইউরোপ মহাদেশের চেয়ে বৃহত্তম দেশ রাশিয়া। এর আয়তন প্রায় ১৭.০৯৮ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার, যা পৃথিবীর মোট আয়তনের ১১ ভাগ জায়গা দখল করে আছে।

চীনের মতো রাশিয়ার বর্ডারও ১৪ টি দেশের সাথে সংযুক্ত। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১৪ কোটি। দেশটি খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ তবে তার বেশির ভাগই এখনো উত্তোলন যোগ্য নয়।

প্রায় সারাবছরই শৈত্যপূর্ণ অবস্থা থাকার কারণে দেশটি বিশ্বের শীতলতম দেশ হিসেবে পরিচিত। রাশিয়ার বেশিরভাগ এলাকা সবসময় তুষারে ঢাকা থাকে।

প্রযুক্তিতে রাশিয়া খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও অস্ত্র তৈরিতে রাশিয়া খুবিই এগিয়ে।

আর একটি মজার তথ্য হচ্ছে, রাশিয়ার আয়তনে প্লুটো গ্রহের চাইতেও বড়। রাশিয়া জনসংখ্যার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ।

রাশিয়া ৮টি ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট এ বিভক্ত। রাশিয়া ইউরেশিয়া ভূখণ্ডের উত্তর অংশের বেশির ভাগ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।

ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশকে একত্রে ইউরেশিয়া বলা হয়।পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর এশিয়ার বেশির ভাগ অংশ রাশিয়াতে পড়েছে।