রিচার্ড ব্র্যানসন একজন খ্যাতনামা ব্যবসায়ী হিসেবে বিশ্বে সমাদৃত। ফোর্বসের বিলিয়নিয়ারের তালিকা অনুযায়ী-রিচার্ড ব্র্যানসন হলেন যুক্তরাজ্যের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি।
৭২ বছর বয়সি বিলিয়নিয়ার রিচার্ড ব্র্যানসন নিজের ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত নানা অভিযাত্রার জন্য তিনি কয়েক দশক ধরে আলোচিত ও সমালোচিত।
মাঝে মাঝে ব্র্যানসন ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অভিযাত্রার সংযোগ ঘটান। যেমন জেফ বেজোস বা ইলন মাস্কের আগেই এই ধনকুবের মহাকাশে ভ্রমণ করেছেন। তাও আবার নিজের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই।
বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে ব্র্যানসনই মহাকাশ ভ্রমণকারী প্রথম ব্যক্তি। তবে তার জন্য এই ধনকুবের প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছেন।
সম্প্রতি এই ধনকুবেরের স্পেনের ম্যালোর্কাতে ‘সন বানইয়োলা’ নামে বিলাসবহুল একটি হোটেল চালু করেন, যা নতুন করে আলোচনায় আনে ব্র্যানসনকে।
হোটেলটির চালু করার অনুষ্ঠানে ব্র্যানসনের কোম্পানি বিভিন্ন মিডিয়া আউটলেটকে আমন্ত্রণ জানায়। হোটেলটি চালুর ঠিক পরের দিন সকালে ব্র্যানসন এল পাইসকে সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে তিনি পর্যটন শিল্পের সম্ভবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। কারণ ব্র্যানসনের অধিকাংশ ব্যবসায়ই পর্যটন সম্পর্কিত।
ব্র্যানসন বলেন, আগামী পঞ্চাশ বছরে মানুষ অনেক বেশি দুর্গম জায়গায় ভ্রমণ করার অভিজ্ঞতা নিতে চাইবে। একই সাথে পৃথিবী যখন ভবিষ্যতে নতুনভাবে গড়ে উঠবে, তখন বর্তমানের মতোই পৃথিবীকে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে জানান তিনি।
২০২১ সালে ভার্জিন গ্রুপের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ব্র্যানসনের রয়েছে দুটি এয়ারলাইন্স কোম্পানি, একটি ক্রুজ কোম্পানি ও বেশ কয়েকটি হোটেল। ওই বছরে কোম্পানিটি ১৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ২০ মিলিয়ন হোটেল ব্যবসা থেকে আয় হয়।
ব্যবসায়ী হলেও ব্র্যানসনের অনেকটা একজন বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কিংবা রাজনীতিবিদদের মতো আলোচিত ব্যক্তি। তবে এ বিষয়টিকে বেশ ভালোভাবে উপভোগ করেন এই ধনকুবের।
চলতি বছরের ২৯ জুন ব্র্যাডসন নিজের কোম্পানির পক্ষ থেকে মহাকাশে বাণিজ্যিকভাবে ভ্রমণের সুবিধা চালু করেন। তবে আপাতত এর মাধ্যমে শুধু নভোচারীরাই যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
এ সম্পর্কে ব্র্যাডসন বলেন, আমি ধারণা করছি, আগামী পাঁচ দশকের মধ্যে মানুষ চাঁদে ভ্রমণ করা শুরু করবে। সেখানে থাকবে হোটেল। হতে পারে আমার কোম্পানিরও একটি হোটেল সেখানে থাকবে।
পৃথিবীর বাইরে এমন সব উদ্যোগ বেশ কঠিন। তবে এটি যে তার জন্য সবচেয়ে দুঃসাহসিক কাজ হবে, এমনটা মনে করেন না তিনি। ব্র্যাডসন খুব ভালো করে জানার পরেও এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিচ্ছেন।
এ সম্পর্কে ব্র্যাডসন বলেন, ”মহাকাশে যাওয়া ছিল স্বপ্নের মতোন। এটিকে বাস্তবে পরিণত করতে আমার ২৫ বছর সময় লেগেছিল, তবে বিশ্বব্যাপী উড়ে বেড়ানোটা বেশ রোমাঞ্চকর। আমি এমনটা করতে পেরে খুব ভাগ্যবান।”
বলে রাখা ভালো, ১৯৭২ সালে ভার্জিন রেকর্ডস নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করেন রিচার্ড ব্র্যানসন। সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন ধনী ব্যবসায়ী ও আলোচিত ব্যক্তি।
যদিও ১৯৯০ এর দশকে তিনি কোম্পানিটি বিক্রি করে দেন তিনি। তবে পরবর্তীতেও বিচিত্রধর্মী সব ব্যবসার সাথে তার কোম্পানিটি যুক্ত ছিল। যা আজ দাপুট দেখিয়ে যাচ্ছেন।
ভার্জিন রেকর্ডসের উল্লেখযোগ্য ব্যবসার মধ্যে ছিল জিম, টেলিফোন কোম্পানি ছাড়াও পর্যটন সম্পর্কিত নানা ব্যবসা।