বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেত্রী শাবানা এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সত্তর দশক থেকে দাবরিয়ে বেরিয়েছেন কোটি কোটি ভক্তদের মাঝে। ‘নতুন সুর’ দিয়ে শিশু শিল্পী হিসেবে সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন আর ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানের শাবানা।
অভিনেত্রী শাবানা’র অভিনয়ের নৈপুন্যে দরশকদের মনে স্থান করে নিয়েছেন। আজ অভিনেত্রী শাবানা সম্পর্কে দশটি তথ্য জানবো। হয়তো অনেকে তার সম্পর্কে এই তথ্য জানেন না।
১. অভিনেত্রী শাবানা বাস্তবে কখনো তার সর্বাধিক সিনেমার নায়ক আলমগীরের স্ত্রী ছিলেন না।
২. শাবানার প্রথম সিনেমা ‘নতুন সুর’ এ আজিজুর রহমান ছিলেন সহকারী পরিচালক, শেষ সিনেমা ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ পরিচালকও আজিজুর রহমান।
৩. শাবানা-জসিম জনপ্রিয় জুটি হওয়া সত্ত্বেও ‘ভাইজান’ সিনেমায় ভাইবোন চরিত্রে অভিনয় করেন তারা।
৪. অভিনেত্রী শাবানা তার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে প্রেমিকা ও স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন ‘শেষ উত্তর’ সিনেমায়, পরে তারা বেশ কিছু সিনেমায় ভাই-বোন চরিত্রে অভিনয় করেন।
৫. উর্দু ছবি ‘চকোরী’ দিয়ে শাবানার নায়িকা জীবন শুরু, যেখানে তিনি আফরোজা সুলতানা রত্না থেকে শাবানা হয়ে উঠেন।
৬. শাবানা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উর্দু সিনেমায় অভিনয় করেন, উর্দু ছবির হিট জুটি ছিল শাবানা-নাদিম।
৭. শাবানা, রাজেশ খান্নার সাথে হিন্দি সিনেমা ‘শত্রু’ তে অভিনয় করেন।
৮. রাজ্জাক না থাকলে, শাবানার ছবিতে পর্দায় সবার আগে শাবানার নাম ভেসে উঠত।
৯. শাবানা-আলমগীর জুটি বেঁধে ১২৬ টি ছবিতে অভিনয় করেন, যা ঢালিউডের একটি রেকর্ড।
১০. জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও ১৯৯৭ সালে অভিনেত্রী শাবানা অভিনয়কে বিদায় জানান।
অভিনেত্রী শাবানার ব্যক্তিগত জীবন
অভিনেত্রী শাবানা ১৯৭৩ সালে ওয়াহিদ সাদিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এইচ কে সাদিক তার ভাশুর। ১৯৯৭ সালে অভিনেত্রী শাবানা হঠাৎ চলচ্চিত্র জগত থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এর তিন বছর পর ২০০০ সালে সপরিবারে আমেরিকায় চলে যান।
শাবানা-সাদিক দম্পতির দুই মেয়ে-সুমি ও ঊর্মি এবং এক ছেলে- নাহিন। তারা সবাই আমেরিকায় বসবাস করছেন।
অভিনেত্রী শাবানার পুরস্কার ও সম্মাননা
অভিনেত্রী শাবানা মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কাকারের মুকুট পড়েন। ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার পান।
এছাড়া ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথক একাডেমী ও জাতীয় যুব সংগঠন পুরস্কার পান।
এর বাইরে অভিনেত্রী শাবানা মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব, রোমানিয়া চলচ্চিত্র উৎসব, কান চলচ্চিত্র উৎসবসহ আরো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশি সিনেমাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।