বিগত ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকলেও ক্ষমতা পালা বদলের পরে কিছুটা টানাপোড়েন চলছে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে আগের মতই সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথা জানান। কিন্তু সেই সম্পর্ক ‘স্বচ্ছতা ও সমতার’ভিত্তিতে হতে হবে বলেও জানান তিনি।
ড. ইউনূসের মন্তব্যের পর ঢাকার সঙ্গে দিল্লি কেমন সম্পর্ক চাইছে তা নিয়ে দুই দেশের রাজনীতি ও কূটনীতিসহ সব অঙ্গণে বিস্তর আলোচনা চলছে। তারপরই বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
দেশটির প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। একই সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঘটনা প্রবাহকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেও আখ্যা দেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা সমীচীন নয়। কিন্তু প্রতিবেশী হিসেবে সেই দেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক ভারত বজায় রাখতে চায়। দুই দেশের সম্পর্ককে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
প্রতিবেশী দেশগুলো একে অপরের উপর নির্ভরশীল বলেও মন্তব্য করে জয়শঙ্কর বলেন,‘প্রতিবেশীরা একে অন্যের সঙ্গে জুড়ে থাকে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক রয়েছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এই সম্পর্ক ও যোগাযোগকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘ পরিস্থিতি সব সময় প্রতিকূলে থাকে না। আবার সবকিছু অনুকূলেও থাকে না। বাংলাদেশে যা হয়েছে তা তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যাপার। এটা একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে মন্তব্য করা অনভিপ্রেত। তবে ভারত সব সময় বিদ্যমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। বাংলাদেশও তাদের নিজের অবস্থান বুঝে সম্পর্কের মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারবে বলেও মনে করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অন্য প্রতিবেশী দেশেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে এবং তা মিটেও গেছে। বাংলাদেশেও তাই হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ‘ অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ‘ ভারত কোনও মন্তব্য করবে না। তবে, আমাদের মধ্যে যে সম্পর্ক আছে , সেটা আমাদের দিক থেকে স্থিতিশীল রাখতে চাই বলে সাক্ষাৎকারে জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পরে এই প্রথম ঢাকার সঙ্গে নয়া দিল্লির সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত মতামত জানালো ভারত।