স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে ভালোবেসে তার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে যুক্ত হতে মধ্যপ্রাচের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে নিজের ব্যবসা বাণিজ্য ফেলে দেশে চলে আসেন তার একনিষ্ঠ এক কর্মী। ওই প্রবাসী মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ ছালিয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আল আমিন খান মোশাররফ।
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ভরাডুবি ও ফল বিপর্যয় নিয়ে এলাকায় চলছে নেতিবাচক আলোচনা। কর্মীদের অবমূল্যায়ন, হাইব্রিড নেতাদের দাপট, আধিপত্য বিস্তার, ক্ষমতার দাম্ভিকতাসহ নানা কারণে ধনকুবের হারুন পরাজিত হয়েছেন বলে অভিমত স্থানীয়দের।
তেমনি প্রবাসী আল আমিন খান মোশাররফকে নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। প্রশংসা হচ্ছে। রক্তের সম্পর্কে কেউ না হয়েও জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে ভালোবেসে প্রবাস থেকে দেশে আসায় তাকে নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে এলাকাজুড়ে।
প্রবাসী মোশাররফের ভাষ্য, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে অবহেলিত ও ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে মাঠে রাজনীতি করে অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছেন ত্যাগী নেতা কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সুষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, মুরাদনগর আসনে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ২০১৪ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন। নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের বহু ত্যাগী নেতাকর্মীকে পদবঞ্চিত করেন ও অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তোলেন। পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও অনেকটা খালি মাঠে গোল দিয়ে সহজ জয় লুফে নেন তিনি।
এসব কারণে চরম ক্ষুব্ধ ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব নির্যাতিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরা ত্যাগী নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রার্থী হিসাবে পেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জাহাঙ্গীর সরকারের বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করেন। তাদের একজন দক্ষিণ ছালিয়াকান্দি গ্রামের আল আমিন খান মোশররফ।
প্রবাসে নিজের ব্যবসা বাণিজ্য রেখে আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্বাচনী এলাকার রাণীমুরী, জাহাপুর, শুশুনডা,বোড়ার চর,সুবিলার চর, দৈলার চর, নেয়ামত কান্দি, ছালিয়া কান্দি, পাঁচ পুকুরিয়া, ভইরাকুরী, সাতমোরা, লক্ষীপুর, তেলুয়া, কালাডুমুর,চৌহুদ্দি, বালুচোনা, নিজ গ্রাম দক্ষিণ ছালিয়া কান্দি, পাহাড়পুর, বাবুটিপাড়াসহ আরো অনেক গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম সরকারের সঙ্গে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে চেয়েছেন ভোট। প্রবাসী আল আমিন খান মোশারফের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন ও পরিশ্রম বৃথায় যায়নি। সাত জানুয়ারি ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছেন তাদের ত্যাগী নেতাকে ভোট।
মুরাদনগর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীক নিয়ে ১০ হাজার ৯ শত ৫৭ ভোটের ব্যবধানে এবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ১৪৮টি কেন্দ্রের ২টি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রেখে ১৪৬ কেন্দ্রর প্রাপ্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এর মধ্যে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৯শত ৭১ ভোট। আর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী এই আসনের দুই বারের এমপি প্রার্থী ইউসূফ আব্দুল্লাহ হারুন নৌকা প্রতীকে ৭২ হাজার ১৪ ভোট পান। জাহাঙ্গীর আলম সরকার জয়লাভ করায় এখানকার আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত।
প্রবাসী আল আমিন খান মোশাররফ জানান, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নেতৃত্বে ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন. এমকে আনোয়ার, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মঞ্জুরুল হাসান মুন্সি, রোদোয়ান আহমেদের মতো বিএনপির হেভিয়েত নেতাদের ঘাঁটিতে আওয়ামী লীগের দুর্গে পরিণত করেন।
তার দক্ষতায় কুমিল্লা উত্তর জেলায় অনেক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রার্থী হয়েছে। তার বিচক্ষণ ও সাহসী নেতৃত্বে কুমিল্লা উত্তর জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সুসংগঠিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় কুমিল্লা-৩ আসনে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিকল্প নেই বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মোশাররফ।
এর আগেও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের পক্ষে সরব ছিলেন আল আমিন খান মোশাররফ। প্রায়ই দিতেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি মুরাদনগরের নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস। আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদে না থাকার পর জাহাঙ্গীর আলম সরকারের পক্ষে একাই সোচ্ছার ছিলেন সারা বছর।