
গ্রীষ্মে শরীর সুস্থ রাখে ও ওজন কমায় এই ৭ ফল
ওজন বেশি বা মোটা হলেই শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই বেশি ওজনকে চিকিৎসকরা বর্তমানে অসুখ বলেই বিবেচনা করে করছেন।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণেই ওজন বাড়তে থাকে। মোটা হলে দেখতে তো খারাপ লাগেই আবার পছন্দের পোশাকগুলোও পরিধানের অযোগ্য হয়ে যায়।
তাই সাধারণ মানুষ বা তারকা, ওজন কমাতে পরিশ্রমের কমতি রাখেন না কেউই। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে কত কিছুই না করে মানুষ। কঠোর শরীরচর্চা থেকে শুরু করে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, আরও কত কী কী।

অনেকেরই ধারণা যে, কম খেলে দ্রুত ওজন কমে তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, ওজন কমাতে গিয়ে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব ঘটলে বিপরীত ফল বয়ে আনতে পারে।
তাই ডায়েটে এমন কিছু খাবার যুক্ত করতে হবে যেগুলো ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি শরীরও সুস্থ থাকবে। আর এখন যেহেতু গ্রীষ্মকাল, তাই চাইলে প্রতিদিন কিছু স্বাস্থ্যকর গ্রীষ্মকালীন ফল খেতে পারেন।
লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন বোল্ড স্কাই এমনই সাত ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে-
রসালো তরমুজ:
ওজন কমাতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। গ্রীষ্মকালীন এই ফলে ’’ভিটামিন এ, সি, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’’ লাইকোপেন থাকে।

এছাড়া, তরমুজে প্রায় ৯২ শতাংশ পানি থাকে, ফলে গরমে শরীর হাইড্রেট বা সতেজ রাখতেও সহায়তা করে। পানি ও ফাইবার থাকার কারণে দীর্ঘক্ষণ পাকস্থলি ভরাও রাখে তরমুজ।
পানিযুক্ত শসা:
বারো মাসই বাজারে শসা পাওয়া যায়। সবুজ রঙের এই ফলটি ডিহাইড্রেশন ও শরীর গরম হওয়া থেকে রক্ষা করতে মানব দেহকে সহায়থা করে।

শসায় প্রায় ৯৫ ভাগ পানি থাকে তবে ক্যালোরির পরিমাণও খুবই কম। দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে পারে শসা। শরীরকে ডিটক্সিফাইও করাসহ ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে বেশ উপকার করে শসা।
ফুটি ফল:
ফুটি ফলে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। গ্রীষ্মকালীন এই ফলটিতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে। তাই এটি ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক।

ভিটামিন এ, বি, কে, সি, জিঙ্ক ও কপার সমৃদ্ধ এই ফলটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে ও রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। এর পাশাপাশি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখে ফুটি ফল।
রসে ভরা আনারস:
রসে ভরা ফল আনারস। এটি ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক একটি ফল। এই ফলে ভিটামিন সি ও প্রচুর ফাইবার তাকে। আনারসে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় দুই প্রকারের ফাইবার বিদ্যামনা।

এই কারণে দীর্ঘ সময় পেট ভরা রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে আনারস। আনারসে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় শরীরকে হাইড্রেটও করে।
সুস্বাদু লিচু:
রসালো সুস্বাদু লিচু ফলটিও ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফল শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করার পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এতে ক্যালোরির পরিমাণও খুব কম থাকে বলে খাওয়ার পরে শরীর বেশ আরাম লাগে। তবে এক সাথে বেশি সংখ্যক লিচু খাওয়া যাবে না।
ফাইবার পেঁপে:
ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ এই ফলটি ওজন কমানোর পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী করে।

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (USDA)-এর তথ্যানুসারে, ১০০ গ্রাম পেঁপেতে মাত্র ৪৩ ক্যালোরি থাকে।
পীচ ফল:
পীচ কম-ক্যালোরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর একটি ফল। এতে ৮৯ ভাগ পানি ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সহায়ক।

পীচ ভিটামিন এ, সি, আয়রন, জিঙ্ক ও অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরপুর। পীচ ফল দেখতে অনেকটা আপেলের মতো। তবে পুষ্টি গুণ বেশি থাকায় পীচকে আপেলের বস বলা হয়ে থাকে।
এই সাতটি ফল গ্রীস্মকালে খেলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। এছাড়া গ্রীস্মে ওজন কমাতেও এই ৭ ফল বেশ সহায়ক। তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই