
একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে
কমল হাসান জাহিদ:
অনেক বড় করে একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে। যেন চিঠিটা পড়ে শেষ করতে তোমার এক দিনের এক বেলা দুপুরের পুরোটাই লাগে।
যে চিঠি তোমার দুপুরে খাবার শেষে রেডিও এফএম শুনতে শুনতে নিত্যদিনের ঘুম রুটিন আজকের মতন ভুলিয়ে দেয়।
যে চিঠিটা পড়ার পর তোমার তোমাকে বারবার আয়নাতে নতুন করে দেখতে ইচ্ছা হয়।
এমন একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে, যেই চিঠির পৃষ্ঠাগুলোতে আমার অশ্রু ফোঁটার ছোপ ছোপ বাদামী রঙের হাল্কা দাগ আর লেপ্টে যাওয়া কালির ওপর দিয়ে তোমার কোমল আঙ্গুলগুলো যেন ছুঁয়ে যায়।
যে চিঠি আমার অভিমানের ভাষা তোমাকে অভিমানী অবুঝ কিশোরীর মতন গাল ফুলিয়ে গোলাপী নাকের সর্দি ঝরায় আর ঢেঁকুর তুলে তুলে কাঁদায়।
অনেক কথায় ভরপুর চিঠিটার আহ্লাদি শব্দগুলো পড়ে যেন তোমার চোখে-মুখে পুতুপুতু ভাব নিয়ে আমার গায়ে তোমার গা ঘেষতে ইচ্ছা করে।
এমন কিছু লিখতে ইচ্ছা করে, যা পড়ার পর, কোন একদিন তোমার গুরুগম্ভীর বাবার সাথে কলেজে যাওয়ার পথে মিটমিট করে হেসে ওঠো, তোমার বাবা ধমক দিয়ে ওঠেন বিব্রত হয়ে।
চিঠিটাতে খুব যত্ন দিয়ে শব্দে শব্দে মালা গাঁথতে ইচ্ছা করে, যেন এ মালার শব্দের ছন্দ পতনের সুর তোমাকে আমার ভাবনায় বিভোর রাখে, যেন গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় চিঠিতে লেখা শেষের দিকের বিদায়ের বাক্যগুচ্ছের যাতনায়।
অনেকদিন ধরেই অনেক বড় করে তোমাকে একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করে।