
আমার আমি
আমার আমি
অতিথি হয়ে জীবনে আসে অনেকেই,
সাময়িক সময়ের আমার একাকিত্বের বোঝা
তার মাথায় নিয়ে –
প্রতিদিনের রোজনামচায় একান্ত নিজের মানুষের তালিকায়,
তার আপন ভুবনে জড়িয়ে ফেলে সে।
পাহাড়ের একাকীত্ব কাটাতে
বরফে আটকে রাখে যেমন জলকে,
আকাশের নিঃসঙ্গতা ঘোচাতে
আড়াল করতে চায় মেঘকে।
তারার মাঝে একলা নয় বোঝাতে
আকাশে উঠে ভরা পূর্ণিমার চাঁদ!
তারপর, একটা সময় পর
যে যার পথে কখন যেন মিলিয়ে যায়!
বরফ জল হয়ে ঝর্নার সাথে মিশে যায়,
মেঘ অঝর ধারায় ঝরে পড়ে বৃষ্টি হয়ে –
আর চাঁদ -ডুবে যায় ঘোর অমাবস্যার অন্ধকারে,
সাময়িকভাবে তাঁরা প্রত্যেকেই ফিরে ফিরে আসে,
কিন্তু কেউ আজন্মকাল জড়িয়ে থাকে না।
সাময়িক সময়ের জন্য তারা –
একসাথে হাসে, একসাথে কাঁদে
সঙ্গী হয় একাকিত্বের!
তারপর মিলিয়ে যায় তার আপন ভুবনে-
প্রিয় মানুষটির সাথে!
আমি পড়ে রই -“একা”!
আনন্দ নিরানন্দ, ভেসে যাওয়া ভ্রান্তিবিলাসে,
ফেলে আসা টুকরো স্মৃতিগুলো কুড়াতে
সুখে -অসুখে, দ্রোহে -বিদ্রোহে –
আমার আমিতে- আমি!
মিছে খুঁজে মরা, মিছে ছুটে চলা,
আকুলতায় পথ চাওয়া চর্বিত- চর্বনে,
আঘাতে প্রত্যাঘাতে অনাহুত দাহে
আমার আমিতে আমিই!
বুকে লুকানো আর্তনাদে
অবলীলায় জমানো কষ্ট!
প্রিয় মানুষটির এক পাহাড় স্মৃতির ভান্ডার
লুকিয়ে রাখি অট্টহাসির নিচে!
প্রতারণায় প্রলুব্ধে পিষে ফেলায়,
নিশ্চিন্তে নিমগ্ন অতলান্ত গভীরতায়
নিচ্ছিদ্র আঁধারে অন্তিম এর অপেক্ষায়
আমার আমিতে শুধুই আমি!!
কলমে: নিপুন দাস, শিক্ষিকা, কবি, লেখিকা, উপস্থাপিকা, আবৃত্তিশিল্পী ও চিত্র শিল্পী।